“জাতে বাংলাদেশি হলো, স্বজাতীয় সমস্যার সারাংশ”
নারী কপাল কুঁচকে অস্পষ্টকণ্ঠে বললো, “অপহারকের মত তাকিয়েছে কেন? রোমহর্ষক চোরাচাহনির প্রভাবে ভয় এবং উত্তেজনায় শিরশির করে শিহরিত হয়েছি। চিন্তা চেতনায় অলীক ভাব বাসা বানাচ্ছে। অবেলায় অপহৃত হলে অসহায় হবো। বৃহস্পতির বারবেলায় একী ভেলকি লাগলো?”
বিজ্ঞাপনের দিকে তাকিয়ে কপালে আঘাত করে নর বললো, “হায় রে হায়! আজেবাজে চিন্তা করতে চাই না আমি এখন বউ পাব কোথায়?”
তার মাথায় হাত দেখে হতাশ হয়ে নারী বললো, “হোটেলে থাকলে এক রাতের জন্য এক সপ্তার বাসা ভাড়া দিতে হবে। দূর ছাই, টেনেটুনে আমি এখন কোথায় যাই?”
নয় ছয় ভেবে এদিক-ওদিক তাকিয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে নর বললো, “বাসা ভাড়া করতে চাই। সমস্যা হলো এই বাসার মালিক নবদম্পতির কাছে বাসা ভাড়া দেবে। আমাকে মারধর করলেও আমি এখন বিয়ে করব না। তাবিজ টোটকা আমি ডরাই।”
নারী অবাককণ্ঠে বললো, “আমার সাথে কথা বলছেন নাকি?”
“জি হ্যাঁ।” বলে নর স্বগতোক্তি করে, “ওর বিয়ে হয়ছে কি না জানতে চাইলে কিভাবে জিজ্ঞেস করব, আপনি বিবাহিতা না অবিবাহিতা? বিয়ে করেছ কি? আপনার বিয়া হইগিছেনি?”
“কী হলো, কথা বলছেন না কেন?” বলে নারী চোখের দিকে তাকালে নর বললো, “খামোখা দুশ্চিন্তা করে কণ্ঠনালী পরিশুষ্ক হয়েছ।”
“দয়া করে বুঝিয়ে বলুন।”
“আপনি অবিবাহিতা হলে ভালো বাসার মালিককে বুঝিয়ে বলব, আপনি হলেন আমার নানার চাচাতো ভাইর একমাত্র নাতিবৌ।”
“কী বললেন?” বলে নারী কপাল কুঁচ করলে নর বললো, “আস্তে আস্তে কথা বললে অবুঝে বোঝাব, নইলে উটের মত উঠে পড়ে দৌড়াব।”
“ঠিকাছে আস্তেধীরে কথা বলব। কী জানতে চান দয়া করে বুঝিয়ে বলুন।”
“না মানে আপনার মতামত জানতে চাই। আপনি কি বিবাহিতা? হ্যাঁ বললে খোঁজাখুঁজি সার হবে বলে রাখলাম। সকলে না জানলেও আমি জানি, ছুমন্তর ফুঁকে সাপুড়িয়া খেলা দেখায় আর বারবার এক কাপড় দেখিয়ে কাপুড়িয়ায় চোখে ধান্ধায় লাগায়।”
“আপনার একটা কাথাও আমি বোঝিনি। কী বলতে চান প্লিজ বুঝিয়ে বলুন। দুশ্চিন্তায় মাথা ভার হয়েছে, কিচ্ছু চিন্তা করতে পারছি না।”
“আউলা ঝাউলা মানুষ আমি অবুঝ, কিচ্ছু বুঝিয়ে বলতে পারি না। আপনি সিলটি ভাষা বুঝেন না?”
“আমি কখনো সিলেট যাইনি। আপনি সিলটি নাকি?”
“জি হ্যাঁ। আপনি কোথা থেকে এসেছেন?”
“আমার জন্ম ঢাকায়। গ্রামে কখনো যাইনি।”
“আপনার কথাবার্তা না বুঝলেও এই লোকের সকল কথা ভালোমতো বোঝব। মাতামাতি না করে আপনি শুধু আমার মুখের দিকে থাকিয়ে খলখল করে হাসবেন। দেন-দার হয়ে আমি লেনা-দেনা করব এবং পরে আমরা আপোশে দেনা-পাওনা চুকাব। এখন কনিষ্টাঙুল ধরে আমার বগলে আসো।” বলে নর হাত দিয়ে ইশারা করলে, অবাককণ্ঠে নারী বললো, “যা বলেছিলেন দয়া করে বুঝিয়ে বলুন, আমি কিচ্ছু বোঝিনি।”
“আমি বলেছি, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আপনি খালি খলখল করে হাসবেন।”
“ইয়া আল্লাহ, একী বিপাকে পড়লাম? যাক, আমার নাম পাপিয়া আপনার নাম কী?”
“আকিকা করার আগে বাবার বাবা আমার নাম সামী রেখেছিলেন। এখন সঙ্গিনী হয়ে আমার সঙ্গে আসো পরে অঙ্গাঙ্গি হতে চাইলে চৌদ্দগোষ্ঠীর নাম ঠিকানা হাতেকলমে লিখে দেব।” বলে সামী মাথা দিয়ে ইশারা করে। পাপিয়া না বুঝেও বোঝেছে এমন ভান করে হাঁটতে শুরু করে বললো, “Ok, do you want me to come with you?”
“Yes please, otherwise we’ll have to sleep rough.”
“Why?”
“Cambridge is very expensive. Before dusk, we need to find shelter or you know what I mean?”
“মিস্টার সামী, নাটক করে হলেও বাড়ির মালিককে মানাতে হবে নইলে আমরা নিরুপায় হবো।”
“আমিও নিশ্চিত হতে চাই, তুমি নাটক করো নাকি?”
“না মানে আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা হলো, ফ্ল্যাটের মালিকের সামনে এমন নাটক করব যেন আমরা খুব পরিচিত।” বলে পাপিয়া হাসার চেষ্টা করলে সামী চোখ কপালে তুলে বললো, “এই রমণী আমার ওস্তাদের মাস্টারণী।”
“কী বললেন?”
Leave a Reply