সিলেটাঞ্চলের ভাষায় বাস্তব ভিত্তিক সামাজিক উপন্যাসের নায়ক এবং নাকিয়া চাচাতো ভাই বোন। নায়ক দায়িত্বশীল সুপুরুষ। নায়িকা বৃটিশ এবং ডাকসুন্দরী। নায়ক নায়িকার প্রেমে পড়ে বিয়ে করে বৃটেনে আসে। নায়কের বোনকে নায়িকার ভাই ভালোবাসে যা শুধু নায়িকার মা জানেন। নায়িকার বাবা নায়েকর বাবার মৃত্যুর কারণ যা পরে জানাজিন হয়। হঠাৎ নায়ক জ্বরাক্রান্ত হলে দৈহিক তাপমাত্রা অত্যধিক হয় এবং সে বিলাপ শুরু করে। তাকে দেখার জন্য সবাই আসেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনে সুস্থ হওয়ার পর তার বোনের সাথে নায়িকার ভাইর বিয়ে পাকা হলে দেশে যেয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় এবং বউ ঘরে তুলার সময় বাবার হন্তার সন্ধান জেনে নায়ক মারমুখো হলে সবাই মিলে তাকে শান্ত করেন এবং পরে সমস্যা আপোসে মিটামট হয়।
চাচাতো বইন হেনাকে বিয়ে করে লন্ডন আসার বছর সাতেক পর কোনো এক ভোরে ক্যান-ক্যানে গলার গানে ঘুম ভাঙলে, জাকির মিঞা উঠে বসে আড়মোড়া দেয়। তাকে দেখেও না দেখার ভান করে হেনা বেগম বিছানা তুলায় ব্যস্ত হলে জাকির মিঞা হাসার চেষ্টা করে বলল... "কে সে সাহসী যে শীতের সকালে শীতল জলে গোসল করে? আমি অন্তত পারব না। ঠাণ্ডা পানি আমি ডরাই। ঠাণ্ডা লাগলে আমার রগে টান মারে।" হেনা মুখ ভেংচিয়ে বলল... “কথ্য কথার কবিতা আপনাকে অতন্ত দক্ষ কবি বানিয়েছে, শুধু একটা সমস্যা হইছে আর তা হইলো বয়লার নষ্ট। বিহানতিবেলা লটরপটর করলে দেয়ালর লগে ঠেকা খাইয়া দেওলার লাখান ঠেকবায়, না ইবায় না হিবায়।" জাকির যথেষ্ট কষ্টে হাসার চেষ্টা করে বিছানা থেকে নামে এবং হাত মুখে ধুয়ে বসারঘরে যেয়ে চা নাস্তা খেয়ে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে গেলে, হেনা রাঁধাবাড়ায় ব্যস্ত হয়। ভরদুপুরে ঘরে ঢুকে হেনাকে ডেকে জাকির বলল... "বউ গো! তাড়াতাড়ি চাইরটা ভাত দে, ভুখে পেট কচলাইয়া মাথা ঘুরার।" হেনা দাঁত কটমট করে বলল... "আথারে পাথারে দৌড়িলে পেটর ভুখে মাথা ঘুরে, হারা বিহান কোয়াই আছলায়?” জাকির :.. "ভাতর কথা হইন্না আভাতির লাখান ঝাৎ করি উঠলে কিতার লাগি?" হেনা :.. "ভাত সালান রান্ধিছিনা এর লাগি ঝাৎ করি উঠছি, কোনতা করতায়নি?" জাকির :.. "তোরে আমি কিতা করতাম লো? হেই! আইজ ই বেতমিজর লাখান মাতরে কিতার লাগি? তামচা মাইরানো তমিজ হিকাইলিমো।" হেনা :.. "দোকলারে একলা পাইয়া তুমিও আইজ বেশি মাতিলিরায়। আর মাতলে আমি তোমারে গলার তাজিব বানাইলিমো।” জাকির :.. "ভুখে পেট কচলার আর তাই ক্যাঁচরম্যাচর করের। বেশি মাতলে কিতা করবে?" হেনা :.. "সকলতা সকল সময় কওয়া যায় না। অখন দৌড়িয়া বাজারো যাও। আর হুনো! আমি একটু পরে বারে যাইমো, পারলে ভাত সালন রাইন্ধো আমি আইয়া মজায় মজায় খাইমুনে।" জাকির :.. "কিতা কইলে?" হেনা :.. "কিতা কইতাম কিতা? আমার এপয়েন্টমেন্ট আছে, দেরি হইলে সমস্যা হইব।" জাকির :.. "দেখরায়নি তাই কিজাত বেটি বইনছে? জাগা থাকি ঢুলিছ না, আইজ তোর চুল ছিড়তাম।" হেনা :.. "তোমার নানায় পারছইন্না আমার চুল ধরতা আর তুমি আমার লগে বরফুটানি কররায়। মারার লাগি দৌড়াইলে বেলকনির দরজা খুইল্লা পুলিশ ডাকিলিমো।" জাকির ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে দু হাতে মাথা চেপে ধরে বলল... "ও নানি গো! ইগুর মাত হুইন্না আমার মাথার ভিতরে কিতা করের। হেই! কে কোয়াই আছবে জলদি আও, ইগুরে আইজ হুড়া দেওয়া লাগব।" হেনা মুখ ভেংচিয়ে বলল... "ত্যানাত ধরার সাহস নাই আর তাইন আমারে কিলাইতা। যেতা মনে কয় ওতা, এর লাগি নাইন্নে তোমার কঠাৎ দিতা গুতা।" জাকির :.. “দেখরায়নি! গুণ্ডাইতর লাখান গুণ্ডিয়া মাতের।" হেনা :.. "মাতমুনানি, অখন অখন ছলাকলা হিকছি। নাইন্নে কইতা, জানলে মাইনষে হাপ লইয়া লেখায় আর না জানলে কুইচ্ছা ডরায়। আমি অখন হাপ কুইচ্ছা চিনি।" জাকির :.. "মেনি লো! মাততে মাততে বেশি মাতিলিরে।" হেনা :.. "বেশি মাতলে কিতা করবায়?"

তারপর পড়ার লাগি ক্লিক মারি ইবই নামাইলাউকা
You must be logged in to post a comment.