গুণমণি

অস্বাভাবিক ভালোবাসার গল্প

নায়িকা হলো বিশেষ গুণে অন্বিত যুবতী এবং ধনকুবের একমাত্র মেয়ে। নায়ক বিলাতফেরত যুবক। বাবার পছন্দসই কন্যাকে বিয়ে না করার কারণ ত্যাজ্যপুত্র হয়ে নায়িকার বাসায় আশ্রিত হয়। বিশেষ গুণের কারণ নায়িকা প্রতিবন্ধীর মত জীবনযাপন করে। নায়ক নায়িকার দূর্বলতা ধরতে পারে এবং বুঝিয়ে বলার পর নায়িকা অন্যদের মত স্বাভাবিক হয়। মা নায়ককে তাড়িয়ে নায়িকাকে নামিদামী পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে চাইলে বিপত্তির উতপত্তি হয়। নায়ক তাড়িত হয়ে বাসা ভাড়া করে এবং পরে বাবা এবং নায়িকা মিলে তাকে খুঁজে বার করে তাদের বিয়ে হয়। আশ্চর্যজনকভাবে একই প্রতিবেশিত্ব নায়কের নানার বসত এবং নায়িকার বাবার সাথে পূর্বপরিচিত।

জ্যৈষ্ঠের দুপুরে কাঠফাটা রোদের তাপে মাটি থেকে ভাপ উঠছিল। ফেরিওয়ালার হাঁক-পাঁক এবং আইস্ক্রিমওয়ালার ঘণ্টার শব্দে ঝিঙের ফুল পর্যন্ত আইঢাই করছিল।
এক বলিষ্ঠ যুবক তাপক্লান্ত হয়ে বিভাসালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে চার পাশে তাকায়। তার হাবভাবে উদ্গ্রীবতা এবং দিগ্ভ্রান্তির দুশ্চিন্তা চোখে মুখে স্পষ্ট। কাঁঠাল গাছের দিকে তাকিয়ে দুহাতে খালি পকেট দেখিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বিড়বিড় করে। বাসার সামনে নামীদামি গাড়ি থামে। বাসার ভিতরে ভদ্রমহিলা তাড়াহুড়ো করে খাবার খেয়ে থালে হাত ধুয়ে বেরিয়ে যান। পরিচারিকা ব্যস্ত হয়ে টেবিলে খাবার সাজায়। গাড়ির পিছনে বসা রূপলাবণ্যবতী যুবতী মোবাইলে বার্তা লিখে পাঠিয়ে মাথা তুলে বাঁয়ে তাকায়, পথচারীর সাথে চোখাচোখি হলে চোখ বুজে শিউরে ডানে মুখ ফিরিয়ে যুবকের হবাভাবে প্রভাবিত হয়ে খিলখিল করে হাসে।
চালক বুক ভরে শ্বাস টেনে শান্তকণ্ঠে বললেন… “বিভাসা, কী হয়েছে?”
বিভাসা হাসতে হাসতে বললো.. “আব্বু, আমি ঠিকাছি। আমাদের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকের অভিনয় দেখে হাসি দমিয়ে রাখতে পারিনি।”
বাবা হাতের ইশারায় যুবকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিম্নকণ্ঠে বললেন… “তোমার নাম কী?”
যুবক হাসার চেষ্টা করে গেট খুলে দিয়ে বলল… ‘আমার নাম অয়ন।”
বাবা আর কথা না বলে গাড়ি চালিয়ে ভিতরে চলে যান। অয়ন গেট বন্ধ করে চারপাশে তাকিয়ে হাঁটতে শুরু করে বলল… “গরমের কালে আহাল শুরু হয়েছে। বিষাদিত বাতাসে মন বিষাক্ত হয়েছে। তা বুঝতে পেরে আমি অবাকদৃষ্টে তাকিয়ে থাকি। অনেকে বলে আমার বুদ্ধিতে ঘুণ ধরেছে। অত্যন্ত দুর্দান্তের দুর্দশা দেখে বিদ্বান ব্যক্তি চিন্তিত হয়েছে এবং বরফট্টাই ঠাটবাটে তল্লাটের বড়লাট হওয়ার হিড়িক পড়েছে। বাস্তবতা পর্যবেক্ষণে অনিচ্ছাসত্ত্বেও বিস্মিত হতে হচ্ছে।”
বাবা দৌড়ে গেটের পাশে যেয়ে ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে হেঁকে ডেকে বললেন… “অয়ন! ফিরে আসো।”
অয়ন থমকে দাঁড়িয়ে পিছন ফিরে তাকায়। বাবা হাতের ইশারায় ডাকেন। অয়ন দ্রুত হেঁটে গেলে, বাবা তার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন… “ক্ষুধাতৃষ্ণায় ঠোঁট মুখ শুকিয়েছে। ভিতরে আসো, এক সাথে খাব।”
অয়ন :.. “আমন্ত্রণের কারণ জানতে চাই।”
বাবা হাঁটতে শুরু করে বললেন… “আমার খুব বেশি ভুখ লেগেছে। ভুখ লাগলে কথা বলতে ভালো লাগে না।”
অয়ন মাথা নেড়ে স্বগতোক্তি করে… “মনে মনে কথা বলে মানুষ হয় অনন্যোপায়, মুখে কথা বললে মন চুপ হয়ে যায়।”
বাবা হাতের ইশারায় পাশে ডেকে বললেন… “আমার পাশে আসো।”
অয়ন গড়িমসি করে পাশে গেলে, বাবা সস্নেহে বললেন… “তুমি কোথায় থাকো?”
অয়ন মুখ বেজার করে বলল… “গলাধাক্কা দিয়ে আমার বাবা আমাকে বাড়ি থেকে বার করেছেন। উদ্বাস্তু হয়ে আমি ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াচ্ছি।”
বাবা তার আপাদমস্তক নিরীক্ষা করে গম্ভীরকণ্ঠে বললেন… “কেন?”
অয়ন :.. “আমি নাকি কুলাঙ্গার।”
বাবা :.. “কুলাঙ্গার শব্দের অর্থ কী?”
অয়ন :.. “বাপে খেদানো মায়ে তাড়ানো, বংশের নাম ডুবানো ছেলে।”
বাবা কিছু বলতে চাইলে, অয়ন তর্জনী দেখিয়ে বলল… “আমার একটা অভিযোগ আছে।”
বাবা :.. “কী?”
অয়ন :.. “আমার মা এখন স্বর্গলোকে। তাই সৎমায়ের লজ্জা এবং সৎমায়ের তাড়ানো বলে অভিযোগ তুলতে চাই।”
বাবা :.. “আমার মা আমাকে বেশি আদর করতেন তাই আমি আমার মেয়েকে বেশি আদর করি।”
অয়ন দাঁত কটমট করে বলল… “আমার ছেলে হাঁটতে শুরু করলে আমি তাকে উচিত শিক্ষা দিতে শুরু করব যাহাতে লজ্জার কারণ না হয়। থাপড়িয়ে দাবড়িয়ে উচিত শিক্ষা দিলে আমার মত খালি পেটে পথে পথে হাঁটবে না।”
বাবা হাসতে হাসতে বললেন… “এই জন্য বিভাসা খিল খিল করে হেসেছিল। যাইহোক! এখন আমার সাথে আসো।”
অয়ন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। বাবা সিঁড়ি বেয়ে উঠে বসারঘরে প্রবেশ করে পিছন ফিরে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাককণ্ঠে বললেন… “ভিতরে আসছ না কেন?”
অয়ন :.. “আপনি আমাকে চিনেন না।”
বাবা :.. “আমি তোমাকে চিনতেও চাই না। আমার মেয়ে তোমাকে চিনেছে। পরিচয় অথবা পরিচিতি আমাদের জন্য নিষ্প্রয়োজন। দিন-রাত কাজ করে যারা সন্ন্যাসরোগে আক্রান্ত হয় আমি তাদের একজন।”
অয়ন :.. “আপনি যা বুঝাতে চেয়েছেন তা আমি বুঝিনি। দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন কি?”

প্রচ্ছদ

তারপর পড়ার জন্য ইবই ডাউনলোড করুন

© Mohammed Abdulhaque

About Me

My name is Mohammed Abdulhaque. I was born in Bangladesh and brought up in England. I left school at sixteen and started to work. In the beginning, it was only a hobby, now it’s like meditation. I love writing, writing keeps me calm. I also like to think about the Creator, who created the earth and the atmosphere. I live in London. Everyone knows that, for Londoners thinking is a luxurious hobby. I am a human, and we make mistakes. For that reason, forgiving is a good deed, and for righteous haven is destiny.

%d bloggers like this: