নীলকমল

“দুঃসাহসিক ভালোবাসার গল্প”

রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক অভিযানের নায়ক নায়িকা আনন্দ উপভোগের জন্য বন্ধু বান্ধবীর সাথে আনন্দ ভ্রমনে বেরিয়ে সুন্দরবনে পৌঁছে বিপদগ্রস্ত হয়। ভবিষ্যদ্বাণীর বিশেষ ক্ষমতা থাকার দরুন নায়ক শ্বাপদসংকুল অরণ্যে আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। মৃত্যু অনিবার্য জেনেও নায়ক শুধু নায়িকার সাথি হয়েছিল যা শুধু তার মা বাবা জানেন। নীলকমল নদীতে তাদের নৌকা অচল হয়। আসন্নবিপদে বিপর্যস্ত হওয়ার আগে সে ডাঙায় উঠে হাঁটতে শুরু করলে নায়িকা তাকে অসুরণ করে, পরে তার বন্ধু এবং নায়িকার বান্ধবী সাথি হয়। চারজন বনের গহিনে যেয়ে গাছে মাচা বানিয়ে আশ্রয় নেয়। পরদিন ভোরে বয়স্ক বাঘ গাছের নিচে এসে গর্জাগর্জি  করে। নায়ক ডাল দিয়ে ধনুক বানিয়ে তীর মারলে বাঘের কানের ভিতর গাঁথে এবং বাঘ মারা যায়। তৃতীয়দিন বাবারা যেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন। বাসায় ফিরে তাদের বিয়ে হয় এবং লেখাপড়া শেষ করে বাড়িঘরের সরঞ্জামসহ চারজন আবার সুন্দরবন যায়।

দ্বাদশ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পাঠাগারে বসে এক চশমা ওয়ালা ঘি-চমচম চিবাচ্ছিল আর নিবিষ্টমনে প্রশ্নোত্তর মুখস্ত করছিল। হঠাৎ কাকতালীয় কণ্ঠস্বর নিঃশব্দ পরিবেশে সশব্দে প্রতিধ্বনিত হয়… “পরীক্ষাপত্রে উত্তর লিখতে হবে না, শুধু প্রশ্ন নম্বর বললে আমার চোদ্দোপুরুষ উদ্ধার হবে এবং জীবনেও তোকে আর ভড়কাব না।”
চশমা ওয়ালা চমকে সভয়ে বললো… “মুহীব, তুই এখানে কী করছিস?”
পেশিবহুল যুবক উদাসকণ্ঠে বললো… “বইয়ের পাতা উলটালে ছাপার অক্ষরে প্রিয়তমার মুখাবয়ব স্পষ্ট হয়। বিমনা হয়ে চোখ বুজলে, মনশ্চক্ষে মানসীকে দেখি। মনশ্চাঞ্চল্যে বিচঞ্চল হলে, প্রাণোচ্ছল হয়ে খলখল করে হাসে। উদাসদৃষ্টে শূন্য হাতের দিকে তাকালে দেখতে পাই, মেহেন্দির রঙ্গে রাঙ্গা হাত ধরে প্রেয়সীর সাথে বনবাসে যাচ্ছি।”
চশমা ওয়ালা :.. “দয়া করে বুঝিয়ে বল।”
মুহীব বিদ্রূপ হেসে মাথা নেড়ে বললো… “ইউনিভার্সিটির উঠানে তোর সাথে সাক্ষাৎ না হলে, বাপের জন্মে তুই আর পরীক্ষার দেয়াল টপকাতে পারবে না।”
চশমা ওয়ালা :.. “কাগজ কলম থাকলে জলদি দে।”
মুহীব অবাককণ্ঠে বললো… “পরীক্ষা আগামী মাসে, কাগজ কলম দিয়ে এখন কী করতে চাস?”
চশমা ওয়ালা :.. “প্রশ্ন নম্বর লিখে দেব।”
মুহীব :.. “তা তুই কেমনে করবে?”
“গূঢ়তত্ত্বে তাত্ত্বিক হওয়ার তথ্য জন্মসূত্রে এই শক্তি পেয়েছি।” বলে চশমা ওয়ালা চশমা ঠিক করলে, মুহীব হতাশ হয়ে কাঁধ ঝুলিয়ে বললো… “আমি পুরাতাত্ত্বিক হতে চাই না, শুধু দ্বাদশ পরীক্ষা পাশ করতে চাই।”
চশমা ওয়ালা :.. “অবশেষে আসল বিষয় বুঝেছিস, এখন বাসায় যেয়ে আদেশ-নির্দেশাদি মেনে পাঠ্যক্রমানুযায়ী পাঠ্যপুস্তক পাঠে অভ্যাস্ত হলে প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করতে বেশি সময় লাগবে না। পরীক্ষায় গোল্লা পেলে তোকে আর মহিষীকে লাঙলে জোড়ে হাল চাষ করাবেন, আঁতেল হতে চাইলে আথালে কাজ করাবেন।”
মুহীব :.. “প্রশ্নোত্তর মুখস্থে ব্যস্ত হলে প্রিয়তমার বিধুবদন দেখার সুযোগ পাব না, আহ।”
চশমা ওয়ালা :.. “পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেলে তোর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করবে।”
মুহীব :.. “কানা খোঁড়ার গুণ বাড়লে কুঁজো তো আর মুখ বুজে বসে থাকবে না।”
চশমা ওয়ালা :.. “বিশ্বাস কর, কান পেতে কানাঘুষো শুনেছি।”
“ঠিকাছে, চনমনে হওয়ার জন্য তুই চমচম খা, পাঠ্যপুস্তক মুখস্থ করার জন্য আমি এখন কানা গরুর মত দৌড়ে বাসায় যাব।” বলে মুহীব দ্রুত বেরিয়ে যায় এবং পরীক্ষা শেষে বন্ধু বান্ধবী এককাট্টা হয়ে দুঃসাহসিক অভিযানে যাওয়ার জন্য শলাপরামর্শ করে। হঠাৎ এক বান্ধবী ইনিয়ে বনিয়ে বললো… “আমি আমার জীবনে জলপ্রবাহের শব্দ শুনিনি। ইস! ঝর্ঝরিত জল কী সুন্দর ঝর্ঝর করে আকাশ থেকে গড়িয়ে পড়ে।”
আরেক বান্ধবী কপালে আঘাত করে বললো… “হায় রে আমার পোড়া কপাল, এক যুগ লেখাপড়া করেও জলপ্রবাহের অর্থ জানে না, মন চাইছে কিলিয়ে দুচোখ থেকে নির্ঝর ঝরনা প্রবাহিত করি।”
এমন সময় বাতাসে কবিতা আবৃত্তি ভাসে… “তোমাকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসি, তোমার মনোরঞ্জনের জন্য ধরে আনব মৌটুসি, তোমার জন্য সুখশয্যা সাজাব ছিটয়ে অতসী, তুমি কবে আমার হবে ওগো প্রেয়সী?”
এক বান্ধবী চারপাশে তাকালে আরেক বান্ধবী বললো… “এই হামিনা, কী হয়েছে?”
হামিনা হাসার চেষ্টা করে বললো… “সাদিয়াকে খুঁজে পাচ্ছি না।”
অনতিদূর থেকে সাদিয়া দাঁত কটমট করে বললো… “আমাকে না তাকে খুঁজে পাচ্ছিস না?”

তারপর পড়ার জন্য ইবই ডাউনলোড করুন

নীলকমল

© Mohammed Abdulhaque

About Me

My name is Mohammed Abdulhaque. I was born in Bangladesh and brought up in England. I left school at sixteen and started to work. In the beginning, it was only a hobby, now it’s like meditation. I love writing, writing keeps me calm. I also like to think about the Creator, who created the earth and the atmosphere. I live in London. Everyone knows that, for Londoners thinking is a luxurious hobby. I am a human, and we make mistakes. For that reason, forgiving is a good deed, and for righteous haven is destiny.

%d bloggers like this: