স্বয়ম্বরা

স্বাবলম্বিনীর ভালোবাসর গল্প

নায়িকা ডাকসুন্দরী এবং বিবাহবিচ্ছেদে বিশেষজ্ঞ। নায়ক ডিগ্রিধারী ব্যবসা পরিচালক। ওরা একে অন্যকে ভালোবাসলেও মুখে না বলার কারণ দুজন নিরাশ্বাস হয়। নায়িকা আধুনিকতা এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতন। নায়ক সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে চায়। সে জানে মানুষ ভুল করে এবং তুচ্ছ বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়। বাল্য বন্ধু হওয়ার সুবাদে এক বিকালে দুজন বেড়াতে যায় এবং নায়কের মোবাইল থেকে নায়িকা ওর ভাইর সাথে কথা বলে এবং পরে নায়িকার বাবা জেরা করে পেটের খবর জেনে নায়কের মোবাইলে ফোন করেন এবং কথায় কথায় বাবারা আসল বিষয় বুঝতে পেরে তাদের বিয়ের সুবন্দোবস্ত করেন এবং বিয়ের পর ওরা সুখস্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করে।
গল্পের নায়ক ডিগ্রিধারী ব্যবসা পরিচালক এবং নায়িকা বিবাহবিচ্ছেদ বিশেষজ্ঞ। দুজন অক্লান্তকর্মী এবং করেকর্মে নিজ কর্মক্ষেত্রে সাফল্যমণ্ডিত। ওরা একে অন্যকে ভালোবাসলেও অজ্ঞাত কারণে বুঝিয়ে বলতে পারে না। আমি তোমাকে ভালোবাসি এবং বাসায় চলো ভালোবাসাবাসি করব, সংলাপ অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও তাদের জন্য কাঁঠালের আমসত্ত্ব। এসব ভেবে হতাশগ্রস্ত হয়ে নায়িকা মোবাইলে বার্তা দেখার সময় অত্যন্ত আকর্ষক বার্তায় ওর চোখ আটকে…
মন যখন চাইবে তখন চলে আসবে, জলাশয়ের পাশে আমাকে তুমি একা পাবে।

[ ] বার্তা পড়ে নায়িকা যখন তাড়াহুড়ো করে, তখন ভিক্টোরিয়া পার্কে লোকজন হাঁটাহাঁটি এবং দৌড়াদৌড়ি করছিল। হাঁসরা জলাশয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল। পানকৌড়িরা জলে ডুবে আধার খুঁজছিল। প্রেমিক প্রেমিকার প্রাণখোলা হাস্যধ্বনী পরিবেশকে প্রাণবন্ত করছিল। [ ]

নায়ক জলাশয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ফোয়ারার পিচকারিতে দৃশ্যমান মেঘধনুর দিকে তাকিয়ে স্বগতোক্তি করে… “আমি জানি তুমি আসবে তাই তোমার আগে এসেছি। তোমাকে খুঁজে বার করার জন্য ঘটকের বায়োডাটা পড়েছি। তোমার ছবি দেখার জন্য ডেটিং সাইট ঘাটাঘাটি করেছি। তোমার সাথে মুখোমুখি হতে না পেরে সঙ্গবিমুখ হয়েছি।”

নায়িকা গাড়ি থেকে বেরিয়ে জলাশয়ের পাশে নায়ককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হলেও দু হাত নেড়ে উচ্চস্বরে বলল... "সরণ! কারো জন্য অপেক্ষা করছ নাকি?”
সরণ হাসার চেষ্টা করে হাতে নেড়ে নিম্নস্বরে বলল… “মন বারবার বলেছিল আজ সুরভির সাথে দেখা হবে।”
সুরভি ডবকা শারিকার মত ঠাট ঠমক ঠসকে হেঁটে যেয়ে উচ্ছলকণ্ঠে বলল... “একা এখানে কী করছিলে?”
সুরভি :.. "মধ্যাহ্ন থেকে সায়াহ্ন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকার পণ করেছিলাম।"
সুরভি :.. "পণরক্ষার জন্য কুড়ি গণ্ডা মন্ডা মানত করতে হবে নাকি?"
সরণ মাথা নেড়ে বলল… "তিন সত্যের আসল সত্য হলো, মনেমনে মানসীর সাথে কথা বলার জন্য জলাশয়ের পাশে একলা দাঁড়িয়েছিলাম।”
সুরভি অপলকদৃষ্টে তাকিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে বলল... “পোড়ো বাড়িতে ভূতরা দৌড়াদৌড়ি করে এবং পড়ো-পড়ো বাড়িতে কেউ বেড়াতে যায় না। আজ অন্তত অন্তরের কথা বলো, একলা-একলি এখানে কী করছিলে?”
সরণ :.. “লীলায়িত ললিতার লীলা দেখার জন্য লালায়িত হয়ে আমি লীলাকাননে এসেছিলাম। তুমি কেন এসেছ?”
সুরভি :.. “জড়ি-বুটি গলায় পরে ডাকসুন্দরী হওয়ার জন্য টোটকা চিকিৎসা করাবার বড্ড ইচ্ছা। তাই আজ কবিরাজের আজুরা জোগাড় করে বাজারে এসেছি।”
সরণ মাথা দুলিয়ে গম্ভীরস্বরে বলল… “উদ্দেশ্যসিদ্ধির চেষ্টায় ভাগ্য পরিবর্তন হয়, গন্তব্য পরিবর্তন হয় না।”
সুরভি চিন্তিত হওয়ার ভান করে বলল… “ভাবুক হওয়ার জন্য লোকজন ভাব ধরে। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তোমার উপর অভাবের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।”
সরণ :.. “আমাদের মাঝে ভাব আছে তাই আমরা সহজে ভাবুক হই। বেশি ভাবুক হওয়ার জন্য অভীক শব্দের অর্থ জেনে আমি ডাকাবুকো হতে চেয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, মনের দ্বন্দ্ব ঘুচাতে পারলে অভাব দূর হয়ে অসভ্যের স্বভাব বদলে।”
সুরভি :.. “পার্কে প্রবেশ করার সময় সাপ ধরার মন্ত্র জপে বেজির লেজে পাড়া মেরেছিলে নাকি?”
সরণ মাথা নেড়ে বলল… “লাল নীল পানি গিলে মাতাল হতে চাই না। প্রেমের নেশা বড় নেশা। আঁখিজল পান করে আমি মাতোয়ারা হই। যারা জানার ওরা জানে, আঁখিজল পান করলে আবে হায়াতের পানি ফিকে হয়।”
সুরভি চারপাশে তাকিয়ে বুক ভরে শ্বাস টেনে বলল... "আজ আমি অত্যন্ত দুঃখার্ত। আমার দুঃখ শোনার জন্য তোমার কি সময় হবে?”
সরণ :.. “তুমি বলতে শুরু করলে আমি মনোযোগ দিয়ে শোনব। আজ আর হুতুমের মত মুখ বানাব না।”
সুরভি :.. “আজ এত ভালোমানুষ সেজেছ কেন?”
প্রচ্ছদ

তারপর পড়ার জন্য ইবই ডাউনলোড করুন

© Mohammed Abdulhaque